মাদকসহ গ্রেপ্তার ছাত্রলীগ নেতার মুক্তির দাবিতে সড়ক অবরোধ

প্রকাশিত: ১০:২১ পূর্বাহ্ণ, জুলাই ৩০, ২০২০

ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মো. মাসুম বিল্লাহ (৩৫) ও তার সহযোগী এনামুল হক নামে এক যুবককে মঙ্গলবার বিকেলে ছয় বোতল ফেনসিডিলসহ আটক করেছে সরাইল থানা পুলিশ।

আটকের পর পুলিশের ওপর হামলাও করেন মাসুম বিল্লাহ। এ ঘটনায় সরাইল থানায় মাদক বহন ও পুলিশের ওপর হামলার অভিযোগে পৃথক মামলা হয়।

এদিকে মাসুম বিল্লাহকে গ্রেপ্তারের প্রতিবাদ ও তার মুক্তির দাবিতে বুধবার দুই স্থানে মহাসড়কে অবরোধের সৃষ্টি করা হয়। ওই নেতার অনুসারিরা কুমিল্লা-সিলেট মহাসড়কের ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ঘাটুরা ও ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের সরাইলের কুট্টাপাড়া মোড়ে অবরোধের সৃষ্টি করে।

ঘাটুরায় টায়ার জ্বালিয়ে প্রতিবাদ করা হয়। কুট্টাপাড়া মোড়ে অবরোধ করা হলে যানবাহন আটকা পড়ে। দুই স্থানেই পুলিশের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। এছাড়া প্রেস ক্লাবের সামনে মানববন্ধন করতে চাইলে পুলিশের বাধার মুখে সম্ভব হয়নি।

মো. মাসুম বিল্লাহ নিজেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ (সদর-বিজয়নগর) আসনের সংসদ সদস্য র. আ. ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা হিসেবেও পরিচয় দিতেন। মাসুমের বিরুদ্ধে আরো তিন মামলা রয়েছে।

জেলা আওয়ামী লীগের এক শীর্ষ নেতা জানান, সংসদ সদস্যের রাজনৈতিক উপদেষ্টা হিসেবে কোনো ধরনের অফিসিয়াল ডকুমেন্ট নেই। মাসুম বিল্লাহ এমনিতেই এটা বলে বেড়াতেন। তিনি আরো জানান, কেউ অপরাধ করলে সেটার তো আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবেই।

অবশ্য মাসুম বিল্লাহ’র অনুসারীরা দাবি করেছেন, তাঁদের নেতাকে ফাঁসিয়ে দেওয়া হয়েছে। মাসুম বিল্লাহ মাদক গ্রহণ বা বিক্রির সঙ্গে কোনোভাবেই জড়িত নয়। অভিযানে থাকা এএসআই আলাউদ্দিনের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ আছে বলে তাঁরা দাবি করেন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আসন্ন কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে টহল পুলিশের তল্লাশিতে পড়েন মাসুম বিল্লাহ। সরাইল থানার এএসআই মো. আলাউদ্দিন সঙ্গীয় এক কনস্টেবল নিয়ে মাসুমকে তল্লাশি করতে গিয়ে লাঞ্চিত হন।

তবুও ওই পুলিশ অফিসার মাসুমের দেহ তল্লাশি থেকে পিছপা হননি। এক পর্যায়ে তার কাছে থাকা ছয় বোতল ফেনসিডিল উদ্ধার করা হয়। এ অবস্থায় মাসুম আবার পুলিশ কর্মকর্তা আলাউদ্দিনকে মারধর করেন।

এক পর্যায়ে একটি সিএনজি অটোরিকশায় করে মাসুম বিল্লাহ সরাইল থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। মাসুমকে থানায় নেওয়ার পর পরই সরাইলের একাধিক জনপ্রতিনিধি পুলিশকে নানাভাবে চাপ দিতে থাকেন তাকে ছেড়ে দেওয়ার জন্য। তবে শেষ পর্যন্ত এএসআই আলাউদ্দিন বাদী হয়ে সরাইল থানায় মামলা দায়ের করেন।

জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শাহাদৎ হোসেন শোভন জানান, এটি ষড়যন্ত্রমূলক মামলা। মাসুম বিল্লাহ এ ধরনের ঘটনার সঙ্গে কোনোভাবেই জড়িত নন। তাঁকে ফাঁসিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে জেলা ছাত্রলীগের ওই নেতা দাবি করেন।

এ ব্যাপারে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. সেলিম উদ্দিন জানান, ঘাটুরায় অবরোধকারীদের খোঁজে বের করা হচ্ছে। সরাইল থানার ওসি নাজমুল আহমেদ জানান, মাসুম বিল্লাহকে আদালতে পাঠানো হয়েছে।