দেশের জন্য যুদ্ধ করেও, বাড়ি নিজ নামে করতে পারিনি বাবু নিউজ ২৪ঘন্টা নিউজ ২৪ঘন্টা প্রকাশিত: ৫:৩৪ অপরাহ্ণ, জুলাই ২৫, ২০২০ স্বাধীনতার ৫০ বছর হতে চলেছে। এখন পর্যন্ত বসতবাড়ির জায়গাটুকু নিজের নামে নেই আদিবাসী মুক্তিযোদ্ধার। সরকারি খাস খতিয়ানভুক্ত ৪ শতক জমির ওপর ৫০ বছর আগে একটি মাটির কুঁড়েঘর করেছিলেন তিনি। সেটাই তার শেষ আবাসস্থল। রাজশাহীর তানোর উপজেলার পাঁচন্দর ইউপির মোহাম্মদপুর আদিবাসীপাড়ায় চার সন্তান নিয়ে বসবাস করেন মুক্তিযোদ্ধা নাইকা মার্ডি। সরকারি খাস খতিয়ানভুক্ত ৪ শতক বসতবাড়ির জমিটি নিজের নামে করতে দীর্ঘদিন বিভিন্ন অফিস ঘুরেছেন, তবুও লাভ হয়নি। এখন তাঁর চার সন্তানের ভবিষ্যৎ নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন। তাই তাঁর একটাই আকুতি- মৃত্যুর আগে যেন বসতবাড়িটি তাঁর নিজের নামে দেখে যেতে পারেন। আদিবাসী মুক্তিযোদ্ধা নাইকা মার্ডি বলেন, দীর্ঘ ২০ বছর তানোর ভূমি অফিসে ধরনা দিয়েও বসতবাড়ির মাত্র ৪ শতক খাসজমি নিজের নামে করতে পারেননি তিনি। ফলে চার সন্তানের ভবিষ্যৎ নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছেন তিনি। এলাকাবাসী ও মুক্তিযোদ্ধা নাইকা মার্ডির পরিবার সূত্রে জানা গেছে, তানোর উপজেলার মোহাম্মদপুর আদিবাসীপাড়ার সবার মতো নাইকা মার্ডিও সরকারি খাসজমির ৪ শতক জমিতে স্বাধীনতার অনেক আগে থেকেই বাড়ি বানিয়ে বসবাস করছেন। মুক্তিযোদ্ধা নাইকা মার্ডি বলেন, বেশ কয়েকবার ভূমি অফিসসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরে আবেদন করেছি; কিন্তু তা নিজের নামে দলিল করে দেননি ভূমি কর্মকর্তারা। তিনি বলেন, ’জীবন বাজি রেখে মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলাম রে বাবু। যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করেছি প্রায় ৪৯ বছর হলো। কিন্তু নিজের বাড়ির মাত্র ৪ শতক জমি নিজ নামে করতে পারিনি রে বাবু। আমার মৃত্যুর পর সন্তানরা এই বাড়িতে থাকতে পারবে কি না জানি না। বেঁচে থাকতে এই বাড়িটা নিজের নামে দলিল করার জন্য চেষ্টা করে ২০ বছরেও তা পারিনি রে বাবু। তানোর উপজেলার সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার আবদুল ওহাব শেখ বলেন, দেশ স্বাধীন করে মুক্তিযোদ্ধারা কেন নিজের বাড়ির জায়গাটুকু তাঁর নিজের নামে বরাদ্দ পাবেন না? বর্তমান সরকারের প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধুকন্যা মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মান দিয়েছেন। কিন্তু স্থানীয় নেতারা মুক্তিযোদ্ধাদের তেমন কোনো গুরুত্ব দেন না। এ কারণেই নাইকা মার্ডির মতো দরিদ্র মুক্তিযোদ্ধারা তাঁদের বসতবাড়িটুকুর জমি নিজের নামে করতে পারেন না। তিনি প্রশাসনের কর্মকর্তাদের সুদৃষ্টি ও হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে তানোর ভূমি অফিসের কর্মকর্তারা বলছেন, নাইকা মার্ডির কোনো আবেদন তাঁদের কাছে নেই। তাই তাঁরা এ বিষয়ে কিছুই জানেন না বলে জানান। এ নিয়ে যোগাযোগ করা হলে তানোর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুশান্ত কুমার মাহাতো বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে বিষয়টি আমি গুরুত্বসহকারে দেখব। SHARES সারা বাংলা বিষয়: