৬৫ দিন পর নোঙর তুলছেন জেলেরা, বাধ সাধছে আবহাওয়া

প্রকাশিত: ৬:৩৫ অপরাহ্ণ, জুলাই ২৪, ২০২০

বঙ্গোপসাগরে মাছ শিকারে দীর্ঘ ৬৫ দিনের সরকারি নিষেধাজ্ঞা শেষ হয়েছে বৃহস্পতিবার (২৩ জুলাই) মধ্যরাতে। ইতোমধ্যেই গভীর সাগরে রওনা হওয়ার প্রস্তুতি নিয়েছেন অনেকেই। আবহাওয়ার কিছুটা উন্নতি হলেই ট্রলারগুলোতে বাজার-সদায় আর বরফ ভর্তি করে তারা ছুটবেন মাছ ধরতে। কিন্তু গত কয়েকদিন ধরে বরগুনা জেলাসহ আশপাশের উপকূলীয় এলাকাগুলোতে থেমে থেমে ভারি বৃষ্টি এবং কালো মেঘ জমে আছে। সাগর উত্তাল রয়েছে। জারি রয়েছে তিন নম্বর সতর্কতা সংকেতও।

এদিকে কর্মহীন দীর্ঘ সময় কাটানোর পর এই নিষেধাজ্ঞা উঠে যাওয়ায় ইতোমধ্যেই জেলে-পাইকার আর আড়ৎদারের পদচারণায় মুখর বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্যবন্দরসহ বরগুনা সদর, আমতলী ও তালতলী উপজেলার জেলে অধ্যুষিত বিভিন্ন এলাকা। প্রাণচাঞ্চল্য ফিরে এসেছে জেলে পল্লিগুলোতেও। দীর্ঘদিন বঙ্গোপসাগরে মাছ আহরণ বন্ধ থাকায় এবার জালে বেশি মাছ ধরা পড়বে এমনটাই প্রত্যাশা জেলেদের।

বরগুনা জেলা মৎস্য কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদ জানান, প্রাকৃতিক ভারসাম্য ঠিক রেখে বঙ্গোপসাগরে সহস্র প্রজাতির মৎস্য সম্পদের সুরক্ষায় চলতি বছরের ২০ মে থেকে ২৩ জুলাই পর্যন্ত ৬৫ দিন সাগরে মাছ ধরার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে সরকার। ইলিশের জাটকা নিধনে নিষেধাজ্ঞা আরোপের সফলতাকে অনুসরণ করে বঙ্গোপসাগরে সহস্র প্রজাতীর মৎস্যসম্পদের সুরক্ষায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। এতে একদিকে যেমন জেলেদের জালে বেশি বেশি মাছ ধরা পড়বে তেমনি ভারসাম্য থাকবে গভীর সাগরের মৎস্য সম্পদেরও।

বরগুনার পাথরঘাটা উপজেলার এফবি মায়ের দোয়া নামের একটি ট্রলারের জেলে জাকির হোসেন (৩৫) বলেন, ‘এমনেতেই করোনা মহামারি, তাই আর কোনো কামও করতে পারিনাই। বৌ-পোলাপান লইয়া কোনোরহম ধার উধ্ধার কইরা চলছি এতদিন। এহন অবরোধ শেষ অইছে। তয় আবার আকাশের অবস্থা ভালো না। ভালো না সাগরের পরিস্থিতিও। আল্লায় যদি রহমত করে আর সাগরের পরিস্থিতি যদি ভালো থাহে তাইলে এইবার যদি কিছু পয়সার মুখ দেখতে পারি। বেশি কিছু চাই না, ধার দেনাডা শোধ করতে পারলেই অয়।’

বরগুনা জেলা মৎস্যজীবী ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি চৌধুরী গোলাম মোস্তফা জানান, অবরোধ শেষ হলেও এখন আবার সাগরে বৈরি আবহাওয়া বিরাজ করছে। এই মুহূর্তে গভীর সাগরে যাওয়া ঠিক হবে কিনা এমন ভাবনায় জেলেদের অনেকেই সংশয়ে রয়েছে।

তিনি বলেন, করোনার কারণে অনেক জেলেই দীর্ঘ এ অবরোধের সময় বিকল্প কোনো কাজ পাননি। তাই অভাব অনটন আর রোগ শোক নিয়ে চরম এক দুবির্পাকে জীবন যাপন করতে হয়েছে তাদের। এখন যদি আবহাওয়া ঠিক হয় আর যদি সাগরে প্রত্যাশিত পরিমাণ মাছ পাওয়া যায় তাহলেই হয়ত কিছুটা পুষিয়ে উঠতে পারবে দরিদ্র জেলেরা।